Thursday, July 31, 2014

মারুফ সাহেবের আজ বেতন-বোনাস পাওয়ার কথা বেতনের টাকা দিয়ে পরিবারের মাসের খরচ মিটাবেন, আর বোনাসের টাকা দিয়ে বাচ্চাদের জন্য ঈদ শপিং করবেন
সন্ধ্যায় বাসায় ফেরার পর সবাই তো মহা খুশি ছেলে-মেয়েরা এসে জড়িয়ে ধরে আনন্দে, কারণ মা বলেছে আজকেই তারা ঈদের শপিং করতে যাবে বাসায় ফিরেই তিনি পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসলেন
আজ আমি বোনাস পেয়েছি, বেতনও পেয়েছি এখন বল তোমাদের কার কি চাহিদা?
ছয় বছরের অহনা বলে তার জামা লাগবে, ১৪ বছরের আরিফ বলে তার পাঞ্জাবী আর জিন্স লাগবে ১৬ বছরের আসমা বলে তার থ্রি পিস হলেই চলবে
স্ত্রীর দিকে তাকান মারুফ সাহেব স্ত্রী মুখের এক্সপ্রেশন দেখে মনে হয় ছেলেমেয়েদের কেনা-কাটা হলেই খুশি তিনি
শুনো, তোমরা যদি চাও আমি তোমাদের ঈদের সব কিছুই কিনে দিব কিন্তু তোমরা যখন ঈদের দিনে লাল জামা পরে ঘুরবে, তখন আমার সামনে ভেসে উঠবে ফিলিস্তিনের রক্তে রঞ্জিত ছোট্ট বাচ্চাটার চেহারা তোমরা যখন আনন্দ করে খেলবে তখন আমার সামনে ভেসে উঠবে জীবন রক্ষার তাগিদে গাজার বাচ্চাদের এক স্থান থেকে আরেক স্থানে পালিয়ে বেড়ানো তোমরা যখন সেমাই খাবে, ভেসে উঠবে তাদের কদিন না খেয়ে থাকা অভুক্ত মুখের ছবি তাই আমি মনস্থির করেছি তোমাদের আপত্তি না থাকলে আমার বোনাসের টাকা গাজার সহায়তার জন্য দিয়ে দিব
পরিবারের সবাই চুপ একটু পর আসমা হাসিমুখে বলে তার এবার নতুন ড্রেস ছাড়াও ঈদ হবে, আরিফ বলে তারও কিছু দরকার নেই স্ত্রীর দিকে তাকাতেই তিনি মাথা নেড়ে মৌন সম্মতি দেন এরপর মারুফ সাহেব তার বোনাসের পুরো টাকাই দিয়ে দেন গাজার সাহায্যার্থে
নাম, পরিচয় ভিন্ন হলেও এটা কোন গল্প নয়, চোখে দেখা একদম বাস্তব ঘটনা এমন অনেক পরিবার এভাবেই গাজার জন্য দান করেছে এবং এখনো করছে
অথচ গতকাল খবরে পড়লাম স্টার জলসার সিরিয়াল বোঝেনা সে বোঝেনার নায়িকারপাখিড্রেসবাবার কাছে চেয়ে না পেয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের এক কিশোরী আত্মহত্যা করেছে !!
আমাদের মূল সমস্যা হল আমরা ছেলে মেয়েদের শেখানোর দায়িত্ব শুধু স্কুল কলেজ বই পত্রের উপর ছেড়ে দেই নিজেরা যে তাদের কিছু শেখাবো, তাদের চিন্তা ধারাকে উন্নত করবো, সেই প্রচেষ্টা খুব কম অভিভাবকই করেন অথচ এটাই সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ
আপনি চাইলে ছোটবেলা থেকেই আপনার বাচ্চাকে সন্ত্রাসী হিসেবে বড় করতে পারেন কিংবা তাকে একজন উন্নত মহৎ মনের মানুষ হিসেবেও গড়ে তুলতে পারেন যেটাই করেন না কেন, শিক্ষাটা কিন্তু আপনাকেই দিতে হবে



No comments :

Post a Comment